মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নির্বাচিত মুহূর্তের মন্তব্য

ঈদ ও পূজা একসাথে এসেছে। এ নিয়ে করা কয়েকটি নির্বাচিত মন্তব্য এখানে দেয়া হলো-


এক.
"ত্যাগের মহিমা ত্যাগী কোরবানি, যেন শুধুই আমিষের অসামান্য চাহিদা পূরন"
দুই.
"হে পরোয়ারদিগার, তোমায় হাজার শোকর...
পুরা মাংস বিলিয়ে দেয়ার ঈমানী পরিক্ষায় তুমি আমাদের ফেলনি..."
তিন
আজকাল কি যে হইছে? কোরবানির গরুর সাথে তোলা সেলফি গুলো দেখলে- কোনটি গরু? কিংবা কয়টি গরু? বুঝতে ব্যপক সমস্যার সম্মুখিন হই!
চার.
ফ্রিজের দোকানে অসম্ভব ভিড় দেখলে বোঝা যায়, কোরবানি আসছে....
এ নব্য কেনা ফ্রিজগুলো ত্যাগের মহিমাকে আগেই কোরবানি করে ফ্রিজিং করার ব্যবস্থা মাত্র!

পাঁচ.
অসূর শুধু অনাচারিই নয়, নির্বোধও বটে!
অমন দৃষ্টিতে বিদ্ধ হবার সুযোগ না নিয়ে, ত্রিশুল বিদ্ধ হওয়া শুধু গাধাদের পক্ষেই সম্ভব!

ছয়.
পূজার জন্য কুমারী পাওয়া হয়তো সম্ভব! কিন্তু যদি 'কুমার পূজার' বিধান থাকতো, তবে অসূর দমনের মতোই কঠিন হয়ে পড়তো একটা সত্যিকারের কুমার খুঁজে পাওয়া।
সাত.
পূজোয় লাল পেড়ে শাড়িতে ঘোমটা তে ঢাকা কলা বৌয়ের সাথে এদেশের নব্য বৌদের আমি মিল খুঁজে পাই! বিয়ের স্বীদ্ধান্তে মেয়েরা, বৌ সাজা কলাগাছ ছাড়া আর কিছুই নয়।
আট.
প্রতি বছর অসূর দমনের এক টিকিটে, দেবী বাপের বাড়ি আসে..
কিন্তু অসূরেরা 'অসূর2, অসূর3, অসূর4.... নামে সিক্যুয়ালী কালে কালে ফিরে আসে....
নয়.
৫ জানুয়ারীর ভোটাধিকার হরন, অসূরিয় অনাচারের গনতন্ত্র ভার্শন

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সারপ্রাইজ ডেমক্রেসির বিরম্বনা

(বাংলাদেশ নিয়ে ফেসবুকে দেয়া আমার 'মুহূর্তের মন্তব্যর' কয়েকটি নির্বাচিত মন্তব্য এখানে দেয়া হলো)

এক.
বাংলাদেশ রাষ্ট্রে এখন শুধুই স্তম্ভ!
নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা, বিচার বিভাগ, ও মিডিয়া।
এ স্তম্ভগুলো দূর্বল করা হয়েছে কি হয়নি? এ প্রশ্নর চেয়েও বড় কথা- স্তম্ভের ওপরে যদি না থাকে জননিরাপত্তার ছাওনি! স্তম্ভের ওপর রাষ্ট্র দাড়িয়ে থাকলেও সেটা জনগনের উপযোগী নয়...
হায়, বাংলাদেশ নামক ঘরের স্তম্ভগুলোই শুধু দাড়িয়ে আছে! যেগুলোকে দেখলে আমার সুশাসনের 'স্মৃতিসৌধ' মনে হয়! যে চারটি স্তম্ভ সৌধের প্রতি বর্গমিলিমিটারে লেখা আছে 'জনঅধিকার হত্যার এপিটাফ'।

দুই.
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী, সুইট সিক্সটিন নয়!
এটা বাকশালের বর্গ....
খেয়াল করুন, ৪ এর বর্গ ১৬।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে আমার চতুর্থ সংশোধনীর বর্গ বলে মনে হয়।
চতুর্থ সংশোধনীতে বহুদলীয় রাজনীতির পরিবর্তে একদলীয় রাজনীতি প্রবর্তন করা হয়েছিলো। ষোড়শ সংশোধনীতে সে একদলীয় শাসনকেই প্রাতিষ্ঠানিক তবে কৌশলী রুপ দেয়া হচ্ছে...

তিন.
বাংলাদেশের গনতন্ত্রে আব্রাহাম লিঙ্কনের চেয়ে সানি লিয়নের প্রভাবটাই বেশী-
ধর্ষন সম্পর্কে সানি বলেছিলো- 'ধর্ষন হলো সারপ্রাইজ সেক্স'!
৫ জানুয়ারীতে যেভাবে ভোটাধিকারকে ধর্ষন করা হয়েছে! আওয়ামীলীগ আর 'জনগনের জন্য, জনগনের দ্বারা, জনগনের সরকার' নয়।
তাদের হাতে গনতন্ত্র সালি লিয়নের 'সারপ্রাইজ ডেমক্রেসি' ছাড়া আর কিছুই নয়...

চার.
গনতন্ত্র বেওয়ারীশ নয়! গনতন্ত্রের বহুওয়ারীশ!!
তবুও হায়!!
গায়েব হয়ে যাওয়া গনতন্ত্র,
বাংলাদেশে এখন তোমার জন্য, গায়েবানা জানাজাই পড়তে হবে....

পাঁচ.
বাংলাদেশ যেনো এক, মধ্যবিত্ত পতিতা!
যে কামনা করে পতির পূন্য, একি সাথে পতিতার সুখও...
মেনে নেয় ভোটাধিকার হরন, একি সাথে কামনা করে গনতন্ত্রও!

ছয়.
১৮ বছর বয়স, সত্যি দুঃসহ!!!

সাধারনত ১৮ বছর বয়সে, তরুনেরা ভোটার হয়। কিন্তু '৭২-এর মেট্রিকের মতো ২০১৪'র যে ইলেকশন!
১৮ বছর বয়স, এখন ভোটাধিকারের নয়! বরং ভোটাধিকার হরনের।

২০১৪ সালের গনতন্ত্র, ১৮ বছর বয়স সত্যি দুঃসহ.......

সাত.
বাংলাদেশে এখন অসুস্থ্যরাই ভালো আছে........
নির্বাচনের আগে অসুস্থ্য হওয়া এরশাদ, এখন ভালো আছে!
ফাঁসির রায়ের আগে অসুস্থ্য হওয়া নিজামী, এখন ভালো আছে!
আসলে, ৫ জানুয়ারীর অসুস্থ্য সরকার যেখানে ভালো আছে! তখন অসুস্থ্যরা ভালো থাকবেই...
শুধু দুঃখ হয়, অসুস্থ্য বাংলাদেশই কেবল ভালো নেই!!!

আট.
"অধিকার ছাড়িয়া দিয়া, অধিকার রাখিতে যাইবার মত বিরম্বনা আর নাই"
৫ জানুয়ারীর অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনে বাংলাদেশের অধিকার লুটেরাদের হাতে ছাড়িয়া দিয়া, বিচারপতি অভিসংশনের ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের স্তম্ভ বিচারবিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা করিতে চাওয়াও এক বিরম্বনা!
বাংলাদেশ, তুমি এখন এক বিরম্বনার নাম।

নয়.
বসন্ত পেতে হলে, মাঘের শীতের হাঁড় কাপুনি পেরিয়ে আসতে হবে..

প্রিয় বাংলাদেশ,শাসকের বিরুদ্ধে জনগনের প্রতিরোধকে যে নামেই ডাকি!
কিবা আসে যায়! হোক সেটা আরব বসন্ত কিংবা বাংলার বসন্ত!
এ বসন্ত পেতে হলে শোষকের মরন কামড়ে তোমাকে কাঁপতেই হবে....

দশ.
প্রত্যেক সরকারের কিছু চাহিদা থাকে।
জনগনের অকুন্ঠ সমর্থন, রাষ্ট্রের পূর্ন নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি।
৫ জানুয়ারীর অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনের আওয়ামী সরকারের যেহেতু জনসমর্থন নেই, তাই তাদের অপরাপর চাহিদাগুলো বেশী সক্রিয় হয়ে উঠেছে! এবং জনগনের বিপরীতে দাড়িয়ে ক্ষমতা টেকাতে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হয়েছে।
গনমাধ্যম নীতিমালাই বলি কিংবা বিচারপতি অভিশংসনের জন্য সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনি! এটা আওয়ামীলীগের বিশেষ চাহিদাকেই নির্দেশ করে। তাই আমরা বলতে পারি, বর্তমান আওয়ামী সরকার বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সরকার।
'বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন' কথাটিতে অবশ্য উপমাগত পার্থক্য দেখা দিতে পারে! বিশেষ চাহিদা একদিকে যেমন থাকে অটিস্টিকের! অন্যদিকে থাকে প্রতিভাবানের। তাই গনমাধ্যম নীতিমালা কিংবা বিচারপতি অভিশংসনের বিশেষ চাহিদার জন্য একপক্ষ আওয়ামীলীগকে অটিস্টিক বলতে পারে! অন্যপক্ষ এ বিশেষ চাহিদার জন্য আওয়ামীলীগকে রাজনৈতিক প্রতিভাবানও বলতে পারে!
এখন প্রশ্ন হলো- এ উপমাগত পার্থক্যের একক মূল্যায়ন কি?
উত্তরঃ ৫ জানুয়ারীর সরকার অবশ্যই অটিস্টিক সরকার। আবার জনমতকে উপেক্ষা করে একতরফা নির্বাচন করে টিকে থাকাটাও প্রতিভারই নিদর্শন। তবে মনে রাখতে হবে, এ প্রতিভা ভোটাধিকার হরন করার! এ প্রতিভা একটি সুষ্ঠ নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার, এ প্রতিভা ভিন্নমত দমন করে টিকে থাকার....
তাই, এ উপমাগত পার্থক্যের একক মূল্যায়ন- আওয়ামীলীগ সৈরাচারী আচরনে আর্টিস্টিক কিন্তু গনতান্ত্রীক সরকার হিসাবে অটিস্টিক।
গনতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা একটি দেশের সরকার হিসাবে আওয়ামীলীগের এ প্রতিভা এবং প্রতিবন্ধীতা তাদের বাকশাল শেকড়ের 'নিউরো বায়োলজিক্যাল ডিজর্ডার'।

সহিংস অক্টোবর কোনদিকে যাবে?

সময়কাল-অক্টোবর ২০০৬

সেবার ঈদ উৎসবটা অনেক আগেই শুরু হয়েছিলো। যে উৎসবে বাড়ি ফেরার তাড়া ছিলো না, টিকিট কাটার লাইন ছিলো না ! বাসে ট্রেনে অস্বাভাবিক ভিড়ও ছিলো না!
তবে ঈদের মতোই খুশি ছিলো, আনন্দ ছিলো, ছিলো বিশ্বকে কিছু দিতে পারার গর্ব। একজন বাংলাদেশীর (ডঃ ইউনুস) নোবেল জয় ঈদের ঠিক ১৩ দিন আগেই পুরো জাতিকে এনে দিয়েছিল সার্বজনীন এক আনন্দের উপলক্ষ।
কিন্তু শান্তিতে নোবেল জয় এদেশের মানুষকে আনন্দিত করলেও শান্তি এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছিলো। তাইতো সেসময় রাজনৈতিকভাবে উত্তপ্ত হয়েছিলো, রক্তাক্ত হয়েছিলো, রাজপথ। লগি বৈঠার আঘাতে সাপের মতো মরেছিলো মানুষ। মৃত মানুষের লাশের উপর হয়েছিলো উদ্দাম নৃত্য। যে দৃশ্য হার মানিয়েছিল কোন অ্যাকশন-থ্রিলার ছবিকেও। আমি জানিনা কোন ড্রামাক্রিটিক এই দৃশ্যকে কিভাবে নিতেন।
বিংশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ড্রামাক্রিটিক ছিলেন কেনেথ টাইনান। উপন্যাসিক হিসেবে সমাদৃত এবং নাট্য সমালোচক হিসাবে বিখ্যাত টাইনান কখনো নাটক লেখেননি! কেন নাটক লেখেননি এমন এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন-
একজন মানুষ তার জীবনে কলম দিয়ে যা কিছু লিখতে পারে তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন হলো নাটক লেখা”।
কঠিন বলেই হয়তো টাইনান নাটককে এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি বলে যাননি, আমাদের জীবনটাই একেকটা নাটক, আর সে নাটক এড়ানো সম্ভব নয়! সেটা ব্যক্তি জীবনেই হোক কিংবা জাতীয় জীবনে!
তাইতো ২৮ অক্টোবর’০৬ বাংলাদেশ এড়াতে পারেনি রাজপথের লগি বৈঠার নাটক। কোন মঞ্চ কিংবা টিভি নাটকের সাথে এ লগি বৈঠার নাটকের বৈসাদৃশ্য হলো-
টিভি নাটকে ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যে স্ট্যানম্যান ব্যবহার করা হয়। যেখানে রক্ত ঝরে না, ঝরে আলতা। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের সেই লগি বৈঠার নাটকের মানুষগুলো কোন স্ট্যানম্যান ছিলো না। লগি বৈঠার আঘাতে তাদের শরীর থেকে আলতা ঝরেনি বরং রক্তই ঝরেছিলো।

সময়কাল- অক্টোবর ২০১৪

আশ্বিন মাসের শেষ সপ্তাহ চলছে। বাংলা প্রবাদে একটা কথা আছে- আশ্বিন, গা শিন শিন। কিন্তু বৈষয়িক উষ্ণতায়, আশ্বিনে পড়ে না গা শিন শিনে শীত, সব কিছুই যে এখন সুসময়ের বিপরীত। পৃথিবীটাই তো এখন উষ্ণ হয়ে উঠছে!
সে উষ্নতাতেই ৫ জানায়ারী একটি একতরফা ও অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনে দেশের দখল নিয়েছে আওয়ামীলীগ!
এর অভাবিত দিকটি হলো- সেই ১৯৫৮ থেকে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা জাতি, ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন এবং নির্বাচন নামক তামাশাকারী গনতন্ত্র মোড়কের সৈরাচারকে মেনে নিয়েছে একরকম বিনা বাঁধায়! বালির ট্রাকেই আটকে গেছে দীর্ঘ সংগ্রামের গনতন্ত্র যাত্রা, বন্ধ করা গেছে আওয়ামীলীগের দেখানো লগি বৈঠার তান্ডব!
আমি ভাবছিলাম- তবে কি সহিংসতাই গনতন্ত্রের নিয়তি?
এ ভাবনার মাঝে আমি দেখছিলাম, আজকের দিনপঞ্চি-
আজ ২রা অক্টোবর, আন্তর্জাতিক সহিংসতা প্রতিরোধ দিবস বা আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস।
১৮৬৯ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন অখন্ড- ভারতের অন্যতম প্রধান রাজনীতিবিদ এবং অখন্ড- ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তি মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধী।
যিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। যে আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো অহিংস মতবাদ বা দর্শনের ওপর এবং এটি ছিলো ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকাশক্তি। সারা বিশ্বের মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওনায় আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
মহান এ নেতার স্মরণে ভারত সরকার দিবসটিকে গান্ধী জয়ন্তী হিসাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করলেও ২০০৭ সালে জাতিসংঘ দিবসটিকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসাবে পালনের ঘোষণা দেয়।
এ অক্টোবরেই জন্ম নিয়ে মোহন দাস করমচাঁদ গান্ধী অহিংসার যে আলো ছড়িয়েছেন, সে আলো তাকে করেছিলো মহাত্মা আর বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে দিয়েছিলো ঘৃনার বিপরিতে ভালোবাসার মন্ত্র!!!
আমি ভাবছিলাম- ২০০৬ এর সহিংস অক্টোবরের বিপরিতে ২০১৪'র অহিংস ভালোবাসার মন্ত্র কি গনতন্ত্র ফেরাতে পারবে?
লেখাটি যখন লিখছি, চারিদিক থেকে ভেসে আসছে ঢাকের শব্দ। শুরু হয়েছে শারদীয়া দুর্গাউৎসব।
ছোটবেলা থেকেই যে উৎসবটা আমার অসম্ভব প্রিয়। দশমীর দিনে যে মেলা হতো, তাতে প্লাস্টিকের লাটিম পাওয়া যেতো, হাতে পেঁচিয়ে শূন্যে ছেড়ে দিলে যে লাটিম বাতাসে ঘুরে উঠতো। লোহার আলযুক্ত কাঠের লাটিম ঘোরানোর সাহস আমার তখনো হয়নি!
ছোটবেলায় ভিতু ছিলাম কিনা জানিনা, তবে কখনো হাতি দেখলে ভয়ে দৌড়ে পালাতাম। অথচ আশ্চর্য, ষষ্টীর সকালে আমি মন্দিরের সামনে ছুটে যেতাম গনেশ ঠাকুরকে দেখার প্রত্যাশায়!
আমি এখনো ছুটে যাই, তবে গনেশকে নয় দেবী দুর্গাকে দেখতে, দুর্গাদের দেখতে!!! মন্দিরের ভেতরে এক দুর্গা, বাহিরে অসংখ্য দুর্গা!!! মন্দিরে অসুর বিদ্ধ হয় ত্রিশুলে আর বাহিরে আমি বিদ্ধ হই দৃষ্টির দংশনে!!!
আমি ভাবছিলাম- অসুরও বিদ্ধ হতে পারতো দৃষ্টির দংশনে? বধ হতে পারতো ভালোবাসার মন্ত্রে? 
কিন্তু হায়! অবিচারের পাহাড়ে তৈরী হওয়া অসুরের, দৃষ্টি বিদ্ধ ভালোবাসার মন্ত্র নয় বরং দূর্গতিনাশক ত্রিশুলই প্রাপ্য।
এখন বাংলাদেশকেই বেছে নিতে হবে- ২০০৬ এস সহিংস অক্টোবর, ২০১৪য় কি রুপ নেবে সহিংসতায়? অহিংসতায়? নাকি অসুর দমনে?

শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

পলিটিক্যাল গেমারের আঁতাত গেমস!

(সাঈদীর রায় নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকে দেয়া আমার 'মুহূর্তের মন্তব্যর' কয়েকটি নির্বাচিত মন্তব্য এখানে দেয়া হলো)

এক.
আওয়ামী ফ্র্যাঞ্চাইজির "যুদ্ধাপরাধ প্রিমিয়ার লীগ" জমে উঠেছে....
শাহবাগি বল সিমানার বাহিরে, জামায়াতি চিয়ারলীডারদের বৃহস্পতি ও রোববার হরতালি উল্লাস...আম্পায়ার দুহাত তুলে জানিয়ে দিলেন- আর অক্কা নয়, এটা ছক্কা....

দুই.
বুঝলাম- 'তলে তলে জামায়াতের মহিলা আমির' নামক নতুন পদ সৃষ্টি হইয়াছে.....!!

তিন.
"আমার মনও শাহবাগের আন্দোলনে ছুটে যেতে চায়।" -১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, সংসদে শেখ হাসিনা।
হায়!! শাহবাগে ব্যাবহৃত আজকের জলকামান আর টিয়ারসেল, বাঙ্গালির দূর্বল স্মৃতিকে শুধুই উপহাস করে..

চার.
সাঈদীর ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া পাঁচ বিচারপতির যে অভিশংসনের দাবী এখনো ওঠেনি!! দেখে আমি বিষ্মিত........!!
অথচ 'চেতনা গেইম' বাঁচাতে, এটাই হতে পারে আওয়ামীলীগের শেষ এবং একমাত্র অস্ত্র!!

পাঁচ.
অগ্রহনযোগ্য নির্বাচনে আসা ক্ষমতার স্বস্তি নিশ্চিত করতে, আওয়ামীলীগ বড় অস্বস্তিতে ফেলেছে নুন্যতম বোধ সম্পন্ন আওয়ামী সমর্থকদের...
অবশ্য, এ নিয়ে গোপন অস্বস্তি কাজ করছে, গোঁড়া আওয়ামীলীগারদেরও! যারা এখনো লোক দেখানো আনুগত্যে বলে যাচ্ছেন- "জামায়াতের সাথে আওয়ামীলীগের কখনোই সমঝোতা হতে পারে না"!
ভাইলোগ,
ধৈর্য্য ধরুন। আর কদিনের মধ্যেই অপেক্ষাকৃত দূর্বল গিনিপিগ কামরুজ্জামানের ফাঁসির মাধ্যমে, শিশু ভোলানো বিচার দেখানো হবে....
যা আপনাদের আঁতাত অস্বস্তি দুর করে, উচ্চস্বরে "জামায়াতের সাথে আওয়ামীলীগের কখনোই সমঝোতা হতে পারে না"! বলার গলার জোড় বাড়িয়ে দেবে..

ছয়.
বান্ধবির বাবা-মা বাসায় না থাকার সুযোগে বাসার দখল নিয়েছেন আপনি!
সমস্যা বলতে, বান্ধবির অতি পাকনা ছোট ভাই! এখন আপনি কি করবেন?
এক বক্স চকলেট আর কয়েকটি গেমস ডিস্ক নিয়ে যান। আপনার কথিত শ্যালকটি চকলেট খেতে খেতে, ভিডিও গেমস নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। আর আপনি নিশ্চিন্ত নির্ভবনায় চালাবেন আপনার রেসিং গেম!!
রাজনৈতিক তরজমাঃ
৫ জানুয়ারী ভোটার বিহীন নির্বাচনে দেশটার দখল নিয়েছে আওয়ামীলীগ!
সমস্যা বলতে, অতি পাকনা জনগন! এখন আওয়ামীলীগ কি করছে?
এক বক্স চেতনা ধরা খাওয়া চকলেট আর আঁতাত গেমস সরবরাহ করেছে। জনগন, আওয়ামীলীগের চেতনা ধরা খাওয়ার চকলেট খেতে খেতে, আঁতাত গেমস নিয়ে মেতে আছে! আর আওয়ামীলীগ নিশ্চিন্ত নির্ভবনায় সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন করে ফেলছে!
ওয়েল প্লেইড, দ্যা পলিটিকাল গেমার 'আওয়ামীলীগ'।