বুধবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১০

পৃথিবীর আদি ইভ টিজার!

স্বর্গের চিরবসন্তের এক সন্ধ্যা। যখন আদি নারী ইভ চোখ মেলেছিলেন, দেখেছিলেন আদি পুরুষ অ্যাডামকে। প্রথম নারী দর্শনে পুরুষ কিম্বা পুরুষ দর্শনে নারী, অ্যাডাম এবং ইভ উভয়ই যখন রোমাঞ্চিত। তখন হয়তো প্রথম দর্শনে প্রেমে মন্ত্রমুগ্ধ অ্যাডাম ইভকে বলেছিলেন-“ম্যাডাম, আই অ্যাম ইওর অ্যাডাম”। জবাবে ইভ হয়তো গেয়েছিলেন-“এতো দিন কোথায় ছিলে???
লক্ষ্যণীয়, ইভকে উদ্দেশ্য করে অ্যাডামের এই উক্তিটি ছিলো প্রেমময় আর তখন অ্যাডামই ছিলেন একমাত্র পুরুষ তাই আমরা ধরে নিতে পারি, আদি নারী ইভ কারো দ্বারা উত্যক্ততার শিকার হতে হননি! অনেকে হয়তো বলতে পারেন, স্বর্গে ইভ উত্যক্ত হয়েছিলেন শয়তানের দ্বারা, যার ফলে তার সুখের সময় নষ্ট হয়েছিলো এবং স্বর্গ থেকে বিতারিত হতে হয়েছিলো। কিন্তু আমি মনে করি, ইভ শয়তান দ্বারা উত্যক্ত নয় বরং প্রভাবিত হয়েছিলেন,যার ফলশ্রতিতে গন্দম খেয়েছিলেন এবং পদস্ফলনে মর্তে নেমেছিলেন।
এ বিষয়ের গুরুত্বপূর্ন দিক হলো- ইভ যুগপৎ অ্যাডাম ও শয়তান দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন! কিন্তু অ্যাডামের প্রভাবটা ছিলো প্রেমময় আর শয়তানের প্রভাব ছিলো প্রতারনায়। অর্থ্যাৎ মানুষ এবং শয়তানের উৎপত্তিতে প্রেম ও প্রতারনা থাকলেও উত্যক্ততা ছিলো না। যা পরবর্তিতে এসেছে ক্রমবিকাশে। মর্ত্যে অ্যাডাম এবং ইভ যখন প্রজননের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে চললেন..... কোন এক সময় সেই অ্যাডামের প্রতিনিধি রাস্তায় দাড়িয়ে কোন এক ইভের দিকে লোল্যুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে, মানবের প্রেম আর শয়তানের প্রতারনা ভুলে হয়ে উঠলো উত্যক্তকারী। অর্থ্যাৎ যারা কাউকে উত্যক্ত করে তারা মানুষও নয় আবার শয়তানও নয়, তারা শুধুই উত্যক্তকারী।
লক্ষ্যণীয়, এ তিন শ্রেনীর কার্যকলাপ- প্রেম, প্রতারনা এবং উত্যক্ততার শিকার হচ্ছে শুধুই মানুষ। কিন্তু আমার দূ:খ হয় বর্তমান সামাজিক বাস্তবতায় আমরা সেটাও শিকার করি না!
যেহেতু টিজের শিকার মেয়েরা বেশী হয় তাই এর সমাজ স্বীকৃত নাম দেয়া হয়েছে ‘ইভটিজিং’। কিন্তু কেন? একজন টিজের শিকার হলে সেটা টিজিং আর কোন মেয়ে টিজের শিকার হলে সেটা ইভটিজিং! কেন? এখানে কেন মেয়েদেরকে নারী আইকন ‘ইভ’ হিসাবে দেখানো হচ্ছে, কেন তাদের মানুষ হিসাবে দেখানো হচ্ছে না!?! ইভটিজিং শব্দটা কি মেয়েদের রক্ষার নামে মেয়েদের অবমাননা নয়?
অবশ্য মেয়েদের মানুষ হিসাবে না দেখে, মেয়ে হিসাবে দেখার প্রবনতা সর্বত্রই। এমনকি নারী ক্ষমতায়নের জন্য উপজেলা পরিষদে যে নারী আসন রাখা হয়েছে, সেখানেও ভাষার ব্যবহারে নারী অবমাননা করা হয়! ভাইস-চেয়ারম্যানদ্বয় অর্থ্যাৎ পুরুষ ও মহিলা। তাদের নাম ব্যবহার করা হয়, ভাইস-চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান! কিন্তু কেন?
পুরুষ যদি ভাইস-চেয়ারম্যান হয় তাহলে নারী কেন মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান? মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যবহার করা হলে কেন পুরুষের ক্ষেত্রে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ব্যবহার করা হবে না? এটা কি নারী ক্ষমতায়নে নারীদের প্রতি বৈষম্য নয়? আমি মনে করি মেয়েদের মানুষ হিসাবে না দেখে শুধু মেয়ে হিসাবে দেখাটা নারী উন্নয়ন ও তাদের উত্যক্ততা প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় বাধা। এ জন্য জনগনের পাশাপাশি সচেতন হতে হবে সরকারকেও।

যদিও আমি এ বিষয়ে যথেষ্ঠ সচেতন। তবে রাস্তায় কোন মেয়েকে ভালো লাগলে, তার সামনে গিয়ে বলবো-“ম্যাডাম, আই অ্যাম ইওর অ্যাডাম”।
রোমাঞ্চিত মেয়েটি বলবে- এতোদিন কোথায় ছিলে?
আমি বলবে-“ তোমার জন্য পৃথিবী তন্নতন্ন করে খুজে ১০৮টি নীলপদ্ম আনতেইতো দেরী হয়ে গেলো!
আমাদের এই কথপোকথন যদি ইভটিজিং হয়, তাহলে দূর্ভাগ্য আমার, দূর্ভাগ্য আদি পুরুষ অ্যাডামের!!!! কারন পৃথিবীর আদি ইভটিজারতো তাহলে তিনিই! -১ডিসেম্বর’১০।

মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১০

অদ্ভূত উটের পিঠে চলছে স্বদেশ।

বেশ কিছুদিন আগেও দেশের চলমান বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের একটি কথা প্রায়ই শোনা যেতো, তা হলো- বিদ্যুৎ বিভাগের উচ্চ পর্যায়ে বি.এন.পি.-জামায়াতের লোক বসে আছে, তারা কৌশলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষন্ন করছে!
আমি ভাবছিলাম, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এমন গতানুগতিক কথা বর্তমানে প্রযোজ্য হতে পারে, পুলিশ বিভাগ নিয়ে!
বিরোধীদলের ডাকা হরতাল নিয়ে সরকার পক্ষ থেকে যখন বলা হয়েছে যে, “হরতাল যেহেতু গনতান্তিক অধিকার তাই সরকার কিম্বা সরকারি দল এই হরতালে কোন রকম বাধা সৃষ্টি করবে না। কিন্তু সারা দেশেই পুলিশ বাহিনী হরতালে বাধা দিয়েছে এবং পরোক্ষভাবে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষন্ন করেছে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে সরকারের লাঠিয়াল হিসাবে পরিচিত পুলিশ কাদের কথায় চলছে?
এ প্রশ্নের উত্তর হতে পারে-
এক. সরকার মুখে বলছে এক কিন্তু করছে আরেক!
এবং দুই. সরকার, পুলিশ বাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেছে!
এ দুটি উত্তরের কোন একটি যদি সত্য হয়, তাহলে বুঝতে হবে দেশ আজ কিভাবে চলছে!
কবির ভাষায় অদ্ভূত উটের পিঠে চলছে স্বদেশ।-৩০নভেম্বর’১০

বুধবার, ৬ অক্টোবর, ২০১০

পুরুষতান্ত্রিক অ্যাসট্রেতে চেপে ধরা আধ পোড়া সিগারেট!!!!!!

বার ঈদটা ছিলো বৃষ্টি ভেজা সঙ্গে ভূমিকম্পের কাঁপাকাঁপি। যদিও ঈদের বেশ আগে থেকেই প্রভা-কম্পে কাঁপছিলো দেশ। রাজিব-প্রভার প্রেম, বাগদান, অপূর্ব-প্রভার পালিয়ে বিয়ে, এসব ছাপিয়েছিলো রাজিব-প্রভার অন্তরঙ্গ ভালোবাসায়। তাই বৃষ্টি ভেজা ঈদে বাসায় আটকে পড়া কোন তরুন, কাঁথার বদলে উষ্নতা খুঁজছিলো ইউটিউবে। যে উষ্নতা ছড়িয়েছে তরুন থেকে বৃদ্ধে, শহর থেকে গ্রামে। বার্ডফ্লু, সোয়াইনফ্লু'র পর মাংস না খেয়ে হয়তো অ্যানথ্রাক্স এড়ানো গেছে কিন্তু এড়ানো যায়নি মাংসল ভিডিও'র প্রভা-ফ্লু। তাইতো প্রভাফ্লু'র সংক্রমনে চলেছে ডাউনলোড-আপলোড, ব্লুট্রুথ যখন পরিনত হয়েছিলো সতিৎকারের ব্লু'তে! সারাদেশে উঠেছে ধিক্কার, ছি প্রভা ছি............
আমি ভিডিওগুলো দেখেছি। কিন্তু আশ্চর্য, এ জন্য আমি প্রভাকে ধিক্কার দিতে পারিনি, ধিক্কার দেবনা!
এটা যদি কোন কামকেলিপটিয়সি, রতিবিলাসীনি নারীর যথেচ্ছা যৌনাচার হতো, কিম্বা হতো অর্থের বিনিময়ে শরিরের বিকিকিনি, অথবা স্বার্থ সংশিষ্ট নীল বানিজ্য হতো, তাহলে আমি ধিক্কার দিতে পারতাম..........
কিন্তু প্রভাতো পুরুষতান্ত্রিক অ্যাসট্রেতে চেপে ধরা আধ পোড়া সিগারেট!!!!!!!
প্রভা-রাজিবের এক্স-রেটেড ভিডিও নিয়ে প্রভার জন্য যত ধিক্কার উঠেছে তার বিন্দুমাত্রও কি হয়েছে রাজিবের নামে???
কেন??? প্রভা নারী বলে? রাজিব নামক পুরুষের আজীবন কোলবালিস হয়নি বলে?
প্রভা-রাজিবের দীর্ঘ দিনের ভালোবাসার কথা আমরা শুনেছি, তাদের বাগদানের কথাও পত্রিকায় পড়েছি। দীর্ঘদিনের প্রেমিক এবং বাগদত্ত'র সাথে শারিরিক সম্পর্ক কি খুব বেশী দোষনীয়???
অনেকে হয়তো বলবেন, দোষটা ভিডিও ধারনে এবং যুগপৎ রাজিব-অপূর্ব'র সাথে প্রতারনায়।
আমি ভাবছিলাম, ভিডিও ধারন কোনভাবই সমর্থনযোগ্য নয়, তবে বাস্তবতার নিরিখে, মিষ্টিভাষী পুরুষ সঙ্গিটির "জানু তুমি আমাকে ভালোবাসো না? বিশ্বাস করো না?? প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নারী সঙ্গিটির ভালোবাসা আর বিশ্বাসের প্রমান দিতে রাজি হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা।
হয়তো প্রভার ক্ষেত্রেও এমন হয়ে থাকতে পারে! ভিডিও গুলো দেখে আমার তেমনি মনে হয়েছে, যেখানে কাজ করেছে দীর্ঘ দিনের ভালোবাসা ও বিস্বাস। যদিও একটি ভিডিও আমার বানিজ্যিক বলে মনে হয়েছে! তবে লক্ষনীয় এটা বানিজ্যিক ভাবে নয় বরং বিদ্বেষ মূলকভাবে বাজারে ছাড়া হয়েছে।
আর যে বিদ্বেষ প্রমান করেছে, রাজিব নীলছবির নায়ক হিসাবে পাস করলেও প্রেমিক হিসাবে কোন মার্ক পাবে না।
ভালোবাসা কি শুধুই শরির? ভালোবাসা কি শুধুই কাছে পাওয়া? একথা সতিৎ যে, জীবনে এমন অনেক সময় আসে যখন ভালোবাসা দিক পরিবর্তন করে! যে পরিবর্তনের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় দীর্ঘ দিনের ভালোবাসা, খড়কুটোর মত উড়ে যায় বাগদানের মত সম্পর্ক। যে পরিবর্তন অনৈতিক হলেও অযোক্তিক অবশ্যই নয়। একথাও সত্য যে, এ পরিবর্তন মেনে নেয়া কঠিন। কিন্তু মেনে নেয়া, না নেয়া কিম্বা মানিয়ে নেয়া ছাপিয়ে তা যখন বিদ্বেষে গড়ায়, লাইফ ক্র্যাশের বাসনায় প্রিয়তমার অনাবৃত শরিরের মত খুলে ফেলা হয় ব্যক্তি গোপনীয়তা। তখন সেটা একই সাথে অনৈতিক এবং অযোক্তিক। যে অনৈতিকতা আর অযোক্তিকতার মিশেলে রাজিব প্রমান করেছে প্রেমিক হিসাবে তার অযোগ্যতাকে এবং বৈধতা দিয়েছে তাকে ছেড়ে প্রভার চলে যাওয়াকে(এমন মানষিকতার একজনের সাথে আর যাই হোক জীবন কাটানো যায় না)। যে নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গের আগে ভাবেনি "প্রভা যদি অসতি হয় তাহলে সে তো অসত!!!
আমি পাপ-পূর্ণের হিসাব করতে যাবোনা। শুধু ভাবতেই শিউরে উঠি একটা মেয়ে এবং তার পরিবারের জন্য এমন অবস্থা কতটা দূর্বিষহ হতে পারে!!! এর জন্য দায়ি কে? কারা??
আমারই কোন ভাই, কারো সন্তান, হয়তো আমি নিজেও!!!......দায়ি সমাজ, সমাজ ব্যবস্থা, সমাজের মানুষ!!!..... কারন রাজিব পুরুষ.....আর পুরুষকে ধিক্কার দেয়া পাপ....তাই নারী তোমার জন্য শত অভিশাপ!!!