সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

নির্বাচনে হবে ফয়সালা! অসাম...অসাম সালা!!

বাংলাদেশের রাজনীতি, চলচিত্র রাজনীতি!
চলচিত্রের মতোই ক্রাইসিস, ক্লাইমেক্স, অ্যাকশন, ভায়োলেন্সে ভরপুর!
চলচিত্রে যেমন ভিলেনের গুলিতে নিহত হয় আদর্শ বাবা কিম্বা ন্যায়পরায়ন স্বামী! আমাদের রাজনীতিতেও রয়েছে তেমন বাবা ও স্বামী হারানোর করুন বাস্তব ঘটনা। চলচিত্রে রয়েছে এতিম সন্তান আর বিধবা স্ত্রীর নায়িকা হবার কাহিনী। আর রাজনীতিতে রয়েছে তাদের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী হবার ইতিহাস। চলচিত্র দেখি সিনেমা হলে টিকিট কেটে, আর রাজনীতিচিত্র দেখি ভোটকেন্দ্রে আংগুলে অমোচনীয় কালি লাগিয়ে ব্যালট কেটে।
তবে আংগুলে লাগানো অমোচনীয় কালি দিনশেষেই মুছে যায় কিন্তু ভোট দিয়ে কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে যে কলংকের কালি আমরা স্বতঃপূর্তভাবে হৃদয়ে মাখি তা পাঁচ বছরেও মোছে না! বিরক্ত জনগন পুরাতন কালির কলংক ঢাকতে নতুন কালি মাখে, যোগ হয় নতুন কলংক! এভাবেই চলে কালির পর কালি, কলংকের পর কলংক!
এখন প্রশ্ন হলো, চলচিত্রের মতো রাজনৈতিকচিত্রে ক্রাইসিস-ক্লাইমেক্স-অ্যাকশন-ভায়োলেন্স থাকলেও কি নেই???
উত্তর-গান।।।
আমি ভাবছিলাম, বাংলাদেশের রাজনীতিচিত্রকে আরো বিনোদনধর্মী এবং সফল করতে উপমহাদেশীয় চলচিত্র ধারা মেনে রাখা যেতে পারে গান। যে গান হতে পারে প্রেমের, বিরহের, আইটেম কিম্বা বিবেকের। চলচিত্রে যেমন প্রসংগ ক্রমে গান রাখা হয়, রাজনীতিচিত্রেও প্রসংগ ক্রমে রাখা যেতে পারে গান।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে, এই মুহুর্তে বাংলাদেশের হট প্রসংগ কোনটি?
উত্তর- রাষ্ট্রপতি কতৃক চিন্হিত খুনি ক্ষমা করার ঘটনা।
গত বছর জুলাই মাসে আইনজীবি নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী বিপ্লবকে দলীয় বিবেচনায় ক্ষমা করেন রাষ্ট্রপতি! এ বছর ৮ ফেব্রুয়ারী বিপ্লবকে আরো দুটি মামলার সাজা কমান বা ক্ষমা করেন রাষ্ট্রপতি! একই সাথে বিপ্লবের খুনের সহযোগীকেও ক্ষমা করা হয়!
এখন চিন্হিত খুনি ও তার সহযোগীকে ক্ষমা করার ঘটনায় প্রাসংগিকতায় কি গান গাওয়া যেতে পারে?
এ গানটা হতে পারে-
হোয়ায় দিস কলাভেরী ডি..
          বা
কিভাবে তুমি আমার সাথে এমনটা করতে পারলে?
রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্যে কলাভেরী ডি গানটা গাওয়া যেতে পারে এবং সে গানের মাধ্যমেই তাকে প্রশ্ন করা যেতে পারে- তিনি জাতির সাথে এমনটি কিভাবে করতে পারলেন? বিপ্লব আইনজীবি নুরুল ইসলামকে খুন করেছিলো গোপনে কিন্তু তিনি তো নুরুল ইসলামকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার খুন করলেন পুরা জাতির সামনে! তিনি জাতির সাথে এমনটি কিভাবে করতে পারলেন?
তবে তামিল ভাষায় কলাভেরী ডি গানটি অনেকের কাছে দূর্বোধ্য মনে হতে পারে! তাই, রাজনীতিচিত্রের জন্য কোন বাংলা গান গাওয়া যেতে পারে। যে গানটি হতে পারে মীরাক্কেলের সেই বিখ্যাত গান, যেটি শুনতে শুনতে কান ঝাঁলা পালা, অসাম...অসাম সালা-

রাষ্ট্রপতি করলেন ক্ষমা খুনিকে
রাষ্ট্রপতি করলেন ক্ষমা খুনিকে
অন্যায়ের জন্য ভাঙ্গলেন, ন্যায়ের তালা,
অসাম সালা, অসাম সালা, অসাম সালা।।


রাষ্ট্রপতির  শরির যে বড় দূর্বল
কোমর আর বুকেতে নেইতো বল
এরাই দেয় গনতন্ত্রে মালা,
অসাম সালা, অসাম সালা, অসাম সালা।।


অসৎ সংঙ্গে হয় যে সর্বনাশ
এ কথায় আরতো কারো নেই বিশ্বাস
খুনির বন্ধুও পাবে ফুলের মালা
ক্ষমায় এবার সহযোগীর পালা
অসাম সালা, অসাম সালা, অসাম সালা।।


রাষ্ট্রপতি বয়সে থুড়থুড়ে
যৌবনে মুড়িরটিন ঝুড়ঝুড়ে
দেশবাসীকে দেখালেন, নপুংসকের কলা
অসাম......অসাম সালা।।
তবে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের অনুকরনে এ গান শুনে অনেকেই জাত গেলো, জাত গেলো বলে তেড়ে আসতে পারে! ভারতীয় আগ্রাসনে জাত, সাংস্কৃতি, রাজনীতি সব গেলো বলে মাতন তুলতে পারেন!
তাই সব ধরনের বিতর্ক এড়াতে রাজনীতি চিত্রের গানটি হতে পারে- "লাগ ভেল্কি লাগ, চোখখে মুকখে লাগ" বলে গাওয়া দেশীয় সাংস্কৃতির বায়োস্কোপের গান-
কি চমৎকার দেখখা গেলো
খুনির দন্ড কইমা গেলো
ন্যায়-নীতি ভাইসা গেলো;
ইবলিশ দেইখা ভেংচি কাটলো..


তার পরেতে দেখেন ভালো
খুনির সংগিও মওকুফ হইলো
অসৎ সংগে পুরুষকার মিললো


কেমন কইরা থাকবেন ভালো
দিন বদলের যে নমুনা হইলো
আমি মনে করি, দেশীয় সাংস্কৃতির এ বায়োস্কোপের গান আমাদের রাজনীতিচিত্রকে আরো আকর্ষনীয় করবে। এমনিতেই আমাদের দেশ, সমাজ, রাজনীতি সবকিছুই আজব বায়োস্কোপে পরিনত হয়েছে!
আমি ভাবছিলাম, প্রয়াত সন্জিব চৌধুরির সেই বিখ্যাত গান-
তোমার বাড়ির রংয়ের মেলায়
দেইখ্যাছিলাম বায়োস্কোপ,
বায়োস্কোপের নেশায় আমায় ছাড়েনা...
...সেই ভাবনায় বয়স আমার বাড়েনা
তবে রাজনৈতিক বায়োস্কোপের নেশায় আমার বয়স বাড়ুক আর না বাড়ুক। সরকারের মেয়াদ বাড়ছে...বাড়ছে ক্ষোভ...আসছে নির্বাচন।
তখন আর জনগন বলবে না- হোয়ায় দিস কলাভেড়ী ডি...বরং বলবে-
ভোটের দিনে হবে ফয়সালা
অসাম...অসাম সালা।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন