শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৪

মরন ভাবনা

এক.
অসুস্থ্ হলে আমার মৃত্যুভাবনা চলে আসে!
মনে হয়- আমার সময় শেষ হয়ে এসেছে, আমি আর বাঁচবো না...

গত ক'দিন হলো শরীরটা খুব খারাপ। মাথা ব্যথা, সর্দি, গলা ব্যথা, বুক ব্যথা করা শুকনো কাশি। কাশতে কাশতে মনে হয় অচিরেই আমি মারা যাবো! কেন জানি না, মৃত্যু নিয়ে আমার পরম আগ্রহ। হয়তো মৃত্যু অনিবার্য এক পবিত্র নিয়তি বলে কিংবা আমি বেঁচে আছিই মরার জন্য...

তবে আমার ভয় হয়। এ ভয় মৃত্যু নিয়ে নয়! বরং মৃত্যু পরবর্তি অন্ধকার, একাকিত্বময় কবরের। এভয় পাপ-পূন্যের হিস্যায় বিচারের মুখোমুখি হওয়ার। এ ভয় অনন্ত শাস্তি ভোগের...

আমি ভাবছিলাম- জীবনের প্রতি মানুষের যে সুতীব্র আকুতি, তা কি জীবনের মাধ্যমে যতটা পারা যায় অনিশ্চিত পরকালীন জগৎকে এড়ানোর চেষ্টা?

দুই.
মরনে আমার ভয় নেই, মরন নিয়ে আমার পরম আগ্রহ!! আমি ভয় পাই এর পরবর্তি জগৎ নিয়ে...
অনেকেই হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন- তফাৎ কি? যখন মরন সে জগৎএরই দরজা?

আসলে আমি মরনকে দেখি জীবনের অর্থ দিয়ে। স্রষ্টা আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, আমাকে নিয়ে তার উদ্দেশ্য আছে বলে। সে উদ্দেশ্য সফল হলে কিংবা আমার দ্বারা আর তা সফল হওয়া সম্ভব না হলে, আমার মৃত্যু ঘটবে।

আমার দ্বারা স্রষ্টার উদ্দেশ্য সফল হলে- আমার মরতে আপত্তি নেই।
আর আমার দ্বারা সে উদ্দেশ্য সফল হবার সম্ভবনা যদি না থাকে তবে আমার বাঁচার প্রয়োজন নেই।

তিন.
মানব জীবনের বড় ভ্রান্তি হলো- বাঁচার তীব্র আকুতিতে, মরনের মতো অনিবার্য নিয়তিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা।

শীতকে এড়াতে চাওয়া, পিঁপড়ের গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্তেরই অপচয়।

চার.
চোখ বন্ধ করে, ধিরে ধিরে চলা শ্বাস-প্রশ্বাসে আমি যখন মনকে কেন্দ্রিভূত করি...
আমি অনুভব করি, আমার ভেতর 'আমি'র অস্তিত্ব...
এটা কি সেই, খাঁঁচার ভেতর অচিন পাখি? জীবনের মাধ্যমে যে দেহখাঁচায় বন্দি?

মরন, অভূতপূর্ব এক পবিত্র বিষয়। যেখানে দেহখাঁচায় আত্মার বন্দিত্ব শেষ হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন