সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৩

কুতর্কের দোকান

 শীতের কাছে গরমের অপমান!!

বুঝলা জেমান, গরমে হইবো শীতের কাছে অপমান..
অবাক হইয়া কইলাম- 'কন কি সাঁইজি? এই আশ্বিন মাসে শীত পড়বো নাকি?
সাঁইজি একতারাটা হাতে নিয়া কন্ঠ ছাড়িল-
♫♪আওয়ামীলীগের হাড় কাঁপাইতাছে, ক্ষমতা হারানোর শীত
নেভার আগে প্রদিপ শিখার জ্বলন, বিপরীত
মায়ে গায় এক সুর আর পোলার গান ভিন্ন
এমন হইলে হইবো কেমনে? লক্ষ্য হইলে অভিন্ন♫♪

সুরের মায়া কাটাইয়া আমি কইলাম- 'বুঝলাম, তেল ফুরাইনা আওয়ামীলীগ এখন নেভার আগে তারুন্যের সইলতা জয়র দিয়া শেষ বারের মত জ্বলতে চাইতাছে! কিন্তু এখানে কোথায় শীত? আর কোথায় ভিন্ন গীত?
সাঁইজি হাসিয়া কইলো- 'বৎস, আওয়ামীলীগে পাইয়া বইছে ক্ষমতা হারানোর শীত। অপর দিকে তারুন্যের গরমে ওয়াজেদ জয় পুরাই বিপরীত। এই বিপরীত্ব খালি শীত-গরমের অনুভূতিতে না, এ বিপরীত্ব তাদের বক্তব্যেও!!! 'শীতের কাঁপনে যখন শেখ হাসিনা গাইছে- '‘প্রার্থী নয় নৌকা দেখে ভোট দিয়েন'। তখন তারুন্যের গরমে জয়ের সুর- 'মার্কা নয়, যোগ্য নেতৃত্ব'!
তা কথা হইলো, যোগ্য নেতৃত্ব যদি আওয়ামীলীগে থাকিত তবে দলীয় সভানেত্রীরে শুধু নৌকা দেখাইতে হইতো না! এখন জয়ের গরমে সাধারন ভোটার বাদই দিলাম দলীয় দালালেরাও যদি মার্কা বাদ দিয়া যোগ্য প্রার্থী!(মন্দের ভালো) বাছিয়া লয়, তবে আওয়ামীলীগের কি হাল হইবো?
আমি বিষ্ময় লইয়া কইলাম- 'ক্ষমতা হারানোর শীতের কাঁপন থামাইতে আসিয়া, জয়ের গরম তো আরো কাঁপন বাড়াইয়া দিবো!!!


সাঁইজি হাসিয়া কইলো- 'বুঝলাতো জেমান, গরমে হইবো শীতের কাছে অপমান'।


 বাস্তবতার তুফান!!

বুঝলা জেমান, অগ্নি শপথ নিভাইবে, বাস্তবতার তুফান..
অবাক হইয়া কইলাম- 'কন কি সাঁইজি? অগ্নি শপথ ভাঙ্গে ক্যামনে? আর ভাঙ্গিলে তা অগ্নি শপথ হয় ক্যামনে?
সাঁইজি একতারাটা হাতে নিয়া কন্ঠ ছাড়িল-
♫♪শপথেরও নাই দরজা
খাঁচা ভাঙ্গাও নয়রে সোজা
তবু পাখি যাবে উড়ে
শুন্য খাঁচা রবে পড়ে।।
বলে সাঁই, এ নয় ছলাকলা
খাঁচার যে নাই তলা♫♪
...
সুরের মায়া কাটাইয়া আমি কইলাম- 'আওয়ামীলীগের এক শাসনে তলা বিহীন ঝুড়ি'র কথা জানতাম কিন্তু তলা বিহীন শপথের কথা তো জানতাম না!! এখানে শপথের অগ্নিইবা কি আর বাস্তবতার তুফানইবা কি?
সাঁইজি হাসিয়া কইলো- 'বৎস,তলা বিহীন ঝুড়িওয়ালারা এখন মিডিয়ার আশির্বাদে আর কথার ফুলঝুড়িতে ভোটারদের চক্ষুসাফাই করতাছে! প্রচারকে অপপ্রচার নাম দিয়া ঘোলা পানিতে ক্ষমতা শিকারের পায়তারা করতাছে। ভাব দেখাইতাছে- 'অপপ্রচার রুখতে পারলেই আওয়ামীলীগ আবার ক্ষমতায়!!!
কিন্তু প্রশ্ন হইলো, আওয়ামী কথিত এ অপপ্রচার রুখবে কারা? আওয়ামীলীগের কর্মীরাইতো, নাকি???
এখন কথা হইলো- 'অপপ্রচার রুখবার অগ্নি শপথ নেয়া আওয়ামী একনিষ্ঠ কর্মিকেও দিনশেষে বাজারে যাইতে হয়! ৪৫ টাকা কেজিতে চাল আর ৮০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনতে হয়!! পেঁয়াজের ঝাঁঝে চোখে জল আসা সে কর্মীর নিশ্চই বুঝতে কষ্ট হয়- কোনটা অপপ্রচার? ৪৫ টাকায় চাল আর ৮০ টাকায় পেঁয়াজ? এটা কি অপপ্রচার? নাকি এ বাস্তবতাকে অপপ্রচারে ঢাকতে চাওয়াই অপপ্রচার?
বৎস, জীবনের প্রয়োজনে সে কর্মীকে বাজার করিতেই হইবে, আর এ বাস্তবতার তুফানে তার অপপ্রচার রুখার শপথ কি অটুট থাকিবে?

বুঝিলো জেমান, অগ্নি শপথ নিভাইবে, বাস্তবতার তুফান।


 অগ্নিসম জালা নিভাইতে বিদ্যুৎফুল মালা!!!

সাঁইজিকে কইলাম- 'সুন্দরবনের এ দূর্ভাগ্যের হেতু কি?
সাঁইজি কইলো- পরশ্রীকাতরতা....
অবাক হইয়া কইলাম- 'কন কি সাঁইজি? সুন্দরবন তো প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চার্য হয় নাই। হইলে না হয় কইতাম- ড. ইউনুসের মতো পুরষ্কার পাওয়াই সুন্দরবনের কাল হইছে...
পরশ্রীকাতরতা কি শুধু পুরষ্কারেই হয়??? বলিয়াই সাঁইজি একতারা হাতে নিলো-
♫♪হরিনের মাংসে, জাগে বাঘের সাধ
সুন্দর হওয়াটাই বড় অপরাধ।
কুটিলের প্রনাম্য নয়, দেবী স্বরসতী
কি করে মানিবে, তার চেয়ে সুন্দর সে অতি♫♪

সুরের মায়া কাটাইয়া আমি কইলাম- বাঘের নজরে, হরিনের মাংস হরিনের শত্রু হইতে পারে কিন্তু সৌন্দর্য্য সুন্দরবনের শত্রু হয় ক্যামনে?
সাঁইজি কইলো- 'আওয়ামীলীগের নজরে বৎস, আওয়ামীলীগের নজরে!!!
যে ফ্যাসিবাদী নজরে এখন আওয়ামীলীগই রাইট, অন্য সবাই রং, নুন্যতম ভিন্নমতও নাকি যুদ্ধাপরাধ বিচার বানচালের ঢং!!
আওয়ামীলীগের এমন লুকিং সেটাপে, সুন্দর মানেই আওয়ামীলীগ আর সুন্দরী মানেই নৌকা! সে মাইন্ড সেটাপে, সুন্দরী নামক গাছ আর সুন্দর নামক বন থাকিবে ভাবিলা কি করিয়া? বলিয়াই সাঁইজি গান ধরিল-
♫♪ সুন্দর নামেতেই, অগ্নিসম জ্বালা
পড়াইতে চাহে তারে বিদ্যুৎফুলমালা♫♪


 ব্যর্থতার বাতায়ন নাকি প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন!!!

বুঝলা জেমান, লোডশেডিং এরও আছে ইতিবাচক অবদান..
অবাক হইয়া কইলাম- 'কন কি সাঁইজি? অন্ধকারে অবদান পাইলেন কৈ?
সাঁইজি একতারাটা হাতে নিয়া কন্ঠ ছাড়িল-
♫♪ও মন তুমি, খুঁজতে জানো না
পায়ের নিচে রইলো পড়ি
হাত দিলেই পাইতা সোনা
মন তুমি, খুঁজতে জানো না♫♪

সুরের মায়া কাটাইয়া আমি কইলাম- 'অন্ধকারে খুঁজলে হয়তো সোনা পাইতাম, কিন্তু অনেক খুঁইজাও তো লোডশেডিংএর অবদান পাইতাছি না!!
সাঁইজি কইলো- 'বৎস, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ...বিভিন্ন সময় কহিয়াছিলো- 'দশ ট্যাকা সের চাইল দিবো, ঘরে ঘরে চাকরী দিবো, ফ্রি'তে সার দিবো, বিরোধী দল থাইকা ডেপুটি স্পিকার দিবো, ঈদের পর ইচ্ছা কইরা লোডশেডিং দিবো...
বিষ্ময় লইয়া কইলাম- 'সাঁইজি, খুঁজতে গিয়া অবদান, এ তো দিতাছেন ব্যর্থতার খতিয়ান?
মুচকি হাসিয়া, সাঁইজি কইলো- 'এখানে শুধু ব্যর্থতার মেঘই দেখলা, আড়ালে থাকা সফলতার সূর্য দেখলা না!! তোমরা শুধু লোডশেডিংয়ের আধারই দেখলা, প্রতিশ্রুতি পালনের আলো দেখলা না!
বৎস, অন্য সবকিছুতে যেখানে খুলিয়াছে ব্যর্থতার বাতায়ন, ঘনঘন লোডশেডিং যে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিরই বাস্তবায়ন।
তাই লোডশেডিংয়ে হতাশ হইয়ো না! বরং আরো লোডশেডিং কামনা কর!! ইহাতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি রক্ষা হোউক, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করার অভ্যাস হোউক। বলিয়াই সাঁইজি একতারা হাতে নিলো-
♫♪লোডশেডিং এমনে প্রতিশ্রুতি ভূবনে
বাস্তবায়নের অভ্যাস করে, গোপনে গোপনে♫♪

আমি লোডশেডিংয়ের অন্ধকার অজ্ঞতায় চুপসে গেলাম।
সাঁইজি হাসিয়া কইলো- 'বুঝলাতো জেমান, লোডশেডিংয়ের ইতিবাচক অবদান!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন