শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১২

অপপ্রচারের মূল্যায়ন!


গত সপ্তাহে ভারতীয় টেলিভিশন এনডিটিভি যখন বিএসএফ-এর অপকর্মের ভিডিওটি প্রকাশ করলো, একজন বাংলাদেশীকে উলঙ্গ করতে দেখে ভাবছিলাম, কিভাবে সীমান্তে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত উলঙ্গ করা হচ্ছে! ফেলানির রক্তের দাগ এখনো মোছেনি, জল্লাদের শানিত অস্ত্র রক্তের দাগ ও ক্ষত টাটকা রাখছে প্রতিনিয়ত! সেলিমকে যখন বর্বরতায় বিবস্ত্র করে পেট্রোল ঢেলে দেয়া হলো, যে পেট্রোলে আগুন জ্বলে উঠলো এ দেশের মানুষের মনে, ব্লগে, ফেসবুকে………জ্বালানী পেলো ভারত বিরোধী মনোভাব।
এর মধ্যেই ফেসবুকে উঠে আসলো আরো দুটি ভয়াবহ ছবি। এক ব্যাক্তির গাছের সাথে বাধা বিভৎস ছবি এবং এক নারীর মৃতদেহ বাঁশে করে ঝুলিয়ে নেবার অমানবিক ছবি, প্রচার করা হলো বিএসএফ কতৃক বাংলাদেশী নির্যাতনের ছবি হিসাবে।
কিন্তু পরক্ষনে প্রমান সহ দেখা গেলো, ছবি দুটিতে সত্যের সাথে মিথ্যা মেশানো হয়েছে। প্রথম ছবিটি বরগুনার এক ডাকাতের প্রতি গ্রামবাসীর নিষ্ঠুরতা, বিএসএফের নয়। দিত্বীয় ছবিটি মাওবাদী নারী গরিলার মৃতদেহ, বাংলাদেশীর নয়। যদিও বিএসএফকে সেভ করার জন্য প্রমান দুটি হাজির করা হয়েছে, তবে লক্ষ্যনীয় দিত্বীয় ছবিটি বিএসএফ-এর বর্বরতার প্রমান।
এখন প্রশ্ন হলো, ছবি নিয়ে মিথ্যাচার কারা কি উদ্দেশ্য প্রকাশ বা প্রচার করলো? এবং এর ফলাফল কি দাড়ালো? এর সম্ভাব্য দুটি কারন ও ফলাফল হতে পারে,
এক. ছবি দুটি দিয়ে ভারতবিরোধী মনোভাবকে উষ্কে দেবার চেষ্টা করা হতে পারে!
ফলাফল- এ চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে কারন প্রমান হয়েছে ছবি দুটি মিথ্যা এবং ভারত মিথ্যাচারের শিকার হচ্ছে।
দুই. সেলিম ঘটনায় ক্ষুন্ন ভারতীয় ইমেজ পূনপ্রতিষ্ঠার জন্য এটা করা হতে পারে! এবং সে উদ্দেশ্যের ধারাক্রম হতে পারে-
. ভারত বিরোধী মনোভাবের বেলুনকে আরো ফুলিয়ে ফেলা এবং পরক্ষনেই দুটি ছবির প্রমান পিনের খোঁচায় বেলুনটি চুপসে ফেলা।
. ভারত নির্যাতক নয় বরং ভারতই তথ্য সন্ত্রাসের স্বীকার হিসাবে পরিস্থিতি তুলে ধরা।
. একটি বিশেষ মহল বাংলাদেশে ভারত বিরোধী মিথ্যা মনোভাব তৈরি করছে, একথায় ফেলানী, সেলিম সহ সকল নির্যাতনের ঘটনাকে হালকা করে ফেলা।
ফলাফল- এ চেষ্টা সফল হয়েছে, এবং ভারত তথ্য সন্ত্রাসের স্বীকার হচ্ছে বলে প্রমান হয়েছে!
লক্ষণীয়, সম্ভাব্য দুটি ফলাফলেই পরিস্থিতির সুবিধাভোগী হয়েছে ভারত!!!
প্রিয় পাঠক, আপনারা এ বিষয়গুলো মূল্যায়ন করতে পারেন। এবং এ মূল্যায়নের পূর্বে বিবেচনায় রাখতে পারেন-
এক. ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ কোন উদ্দেশ্য প্রনোদিত ছবি নয় বরং সত্য।
দুই. সেলিমের বস্ত্রহরন কোন মহাকাব্যিক শুটিং নয় বরং বাস্তব বর্বরতা।
তিন. সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে মানুষ মারাও সত্য।
আমি আশা করছি, এ মূল্যায়নের ফল এই লেখার মন্তব্যের ঘরে পাবো………

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন