বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১১

আমার নাম সমগ্র!!!




আমার পরিচিতজনেরা, প্রায়শই আমার নাম নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভোগেন!!!
আমার ডাক নাম, ফেসবুক আইডি, সার্টিফিকেট নাম আর ব্যবহৃত নামের নানা মোহনায় বিভ্রান্ত ও বিরক্ত হওয়াই স্বাভাবিক!
জানিয়ে রাখি, পারিবারিক সুত্রে আমার নাম মোঃ আসাদুজজামান সুমন।
নিজেকে অনন্য হিসাবে মেলানোর অংশ হিসাবে ২০০৫ সালে আমি নাম নিয়ে প্রথম ব্যান্ডিং শুরু করি। আমার নাম থেকে বাদ পড়ে যায় সুমন এবং মোঃ কে কখনো মোহাম্মাদ কিম্বা মুহাম্মাদ লিখে নাম হয় মোহাম্মাদ আসাদুজজামান কখনো মুহাম্মাদ আসাদুজজামান।
২০০৬ সালে ধর্মীয় অংশ বাদ দিয়ে, আসাদুজজামান লেখা শুরু করি।
নামের আগের ও পেছনের অংশ বাদ দিয়েও আমি সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না তাই 69 ব্যান্ডিং বা ওলট-পালট করে "জামান আসাদ" লিখতে থাকি।
তবে আমি চাচ্ছিলাম, নামের এমন ব্যান্ডিং যা হবে অনন্য, অর্থবহ এবং অনুপ্রেরনাদায়ক।
আমার সামনে ছিলো সফল এবং বিখ্যাত ব্যাক্তিত্বরা,  কবি শামসুর রাহমান, লেখক শফিক রেহমান, অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, সুরকার এ আর রহমান, যারা প্রতেকেই তাদের নাম পরিবর্তন করেছিলেন এবং সে পরিবর্তনের ধারা ছিলো মাত্র একটি অক্ষর এদিক ওদিক করে!!!
অনেকেই হয়তো এ আর রহমানের ক্ষেত্রে দ্বিমত প্রসন করতে পারেন! তারা বলতে পারেন, এ আর রহমান আল্লা রাখা রহমানের সংক্ষিপ্ত রুপ, পরিবর্তিত রুপ নয়। কিন্তু তারা হয়তো জানেন না, এ আর রহমান ধর্মান্তরিত হবার পর নাম রাখেন আব্দুর রহমান। তাই তার নামের সংক্ষিপ্ত রুপ হওয়া উচিত ছিলো এ রহমান। কিন্তু তিনি লিখতে থাকেন এ আর রহমান। পরবর্তিতে বিখ্যাত তবলাবাদক ওস্তাদ আল্লা রাখা'র নামানুশারে তিনি পুনরায় নাম পরিবর্তন করেন!
তবে নামের একটি অক্ষর এদিক ওদিক করে ব্যান্ডিং করার ধারনাটি আমি পাই গ্রিক মিথ থেকে।
প্রেমের প্রতিক ROSE(রোজ), আর প্রেমের দেবতা??? ROSE এর শেষের  E সামনে এনে EROS(এরোস)।
মহান শিল্পী লিউনার্দো দ্যা ভিঞ্চি এমন  ধারনা থেকেই  সম্ভবত মোনালিসার নামকরন করেছিলেন। ভিঞ্চি নারী পুরুষের সমতায় বিশ্বাস করতেন, প্রাচীন মিশরীয় যৌনতার দেবতা আমন  এবং দেবী লিসা কে পাশাপাশি রেখে AMONLISA তে  AMON এর A কে মাঝে বসিয়ে  MONALISA করেছেন।
আমার নামের ব্যান্ডিং করার সময় খেয়াল করি ASADUZZAMAN লিখতে চারটি A প্রয়োজন হয়। কার্ড খেলা সম্পর্কে যাদের ধারনা আছে তারা জানেন, সবচেয়ে বড় কার্ড টেক্কা বা A। কিন্তু চার টেক্কা  মূল্যহীন। অপরদিকে থ্রি কার্ড খেলায় সবচেয়ে আরধ্য টেক্কার ট্রয় বা তিনটি A, যার ওপর পৃথিবী বাজি রাখা যায়। তাই আমি আমার নামে মূল্যহীন চারটি A থেকে একটি A কমিয়ে প্রেমের দেবতা এরসের অদ্যাক্ষর E দিয়ে ২০০৭ সালে নামের চুরান্ত ব্যান্ডিং ASADUZZEMAN বা আসাদুজজেমান করি। যেখানে রয়েছে তিনটি A বা টেক্কার ট্রয়, যেন আসাদুজজেমানের ওপর পৃথিবী বাজি রাখা যায়। এ নামেই আমি পত্রপত্রিকা ও বিভিন্ন ব্লগে লেখালেখি শুরু করি। ফলে আসাদুজজেমান নামটি সামাজিক ভিত্তি পায়। 
আমার নামের চুরান্ত ব্যান্ডিং এর পর প্রতি বছর আমি একটি করে নিক বেছে নিতে থাকি! যে নিক কোথাও ব্যবহৃত হয় না তবে আমাকে অনুপ্রেরনা যোগায়!
২০০৮ সালে আমার নিক ছিলো SUMAN। SUMON এ আমি O'র জায়গায় A দিয়ে MAN লিখি কারন আমি বিশ্বাস করি সবার ওপরে মানুষ সত্য।
২০০৯ সালে, আমার তারুন্য বোঝাতে থিম ব্যবহার করি- 
মেয়েদের জান
ছেলেদের ভাইজান
একমাত্র ইনসান
আসাদুজজেমান।
২০১০ সালে আমি FACEBOOK ব্যবহার শুরু করি। এবং আমার FACEBOOK ID ব্যান্ডিং করি ZEMAN ASAD।  নামের দুটি অদ্যাক্ষর Z এবং A। A তে মিশরীয় দেবতা আমন এবং Z তে শনির চাঁদ বা দুই মুখি দানব জ্যানাস!!! আসলে সবকিছুতেই দ্বিমুখিসত্তা কাজ করে। ভালো-মন্দ, দিন-রাত, আলো অন্ধকার, দেবতা ও দানব। আমার মধ্যে ভালো ও মন্দের রুপক অর্থে নামের অদ্যাক্ষরে রয়েছে দেবতা ও দানব, আমন ও জ্যানাস! লক্ষ্যনীয়, আমি দানব জ্যানাসের Z বা জেমানকে আগে এবং দেবতা আমনের A বা আসাদকে পরে স্হান দিয়েছি!!! কারন ব্যাক্তিত্বর দ্বিমুখী দন্দে শেষে টিকবে দেবতা। মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর জয় তো চিরকালীন।
২০১১ সালে আমার নিক ছিলো ZEMANIA (ZEMAN+MANIA)! আমার উন্মাদনাময় জীবনের প্রতিচ্ছবি  ZEMANIA।

২০১২ সালে আমার নিক SHUMAN। বর্তমানে আমরা বাস করছি ব্যাক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থপর  দুঃস্বপ্নের যুগে.....মাঝে মাঝেই ভাবি, ঘুম ভাঙ্গলেই হয়তো ফিরে পাবো মানবিক এক পৃথিবী.....কিন্তু ঘুম ভাঙ্গেনা!!! হয়তো এ ঘুম ভাঙ্গার মতো মানবিক হতে পারিনি.... তাই ২০১২ হতে পারে মানবতাবোধ জাগ্রত করার বছর। লক্ষ্যনীয়, SHUMAN এ অদ্যাক্ষর S আলাদা করলেই এ  বোধ ফুটে ওঠে...S HUMAN

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন